বিজেপির বাংলা জয়ের মূল হাতিয়ার হল তৃণমূলে ভাঙন। তৃণমূলে ভাঙন ধরিয়ে বিজেপি নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে চাইছে। আর সেই কাজ নীরবে বিগত তিন বছরের বেশি সময় ধরে করে চলেছেন মুকুল রায়। তিনিই গোপনে তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন, যার জেরে মাঝেমধ্যেই বেসুরো বাজছেন তাঁরা। ২০১৯-এ লোকসভা ভোটের আগে মুকুল রায় তৃণমূল ভেঙেই বিজেপির প্রার্থী করেছিলেন অনেককে, এবারও তার অন্যথা হলে অবাক হবেন না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ বিগত কয়েক মাস ধরে তৃণমূলে একটু একটু করে ফাটল ধরছে। অনেক নেতা-নেত্রী বেসুরো বাজছেন। কেউ ইতিমধ্যেই দল ছেড়েছেন, কেউ এখনও অপেক্ষায়।
২০১৯-এর ভোটের আগে থেকেই দলত্যাগের হিড়িক পড়ে যায় তৃণমূলে। সৌমিত্র খান থেকে শুরু করে অর্জুন সিং, অনুপম হাজরা, নিশীথ প্রামাণিক-সহ একাধিক নেতাকে তৃণমূল থেকে ভাঙিয়ে নিয়ে গিয়ে প্রার্থী করেন মুকুল রায়। আর লোকসভার সাফল্যের পর সব্যসাচী দত্ত থেকে শুরু করে শোভন চট্টোপাধ্যায়, শুভ্রাংশু রায়-সহ অনেকেই যোগদান করেন। মুকুল রায় দল ভাঙানোকে রাজনীতির অঙ্গ বলে মনে করেন। তাই রাখঢাক না করেই তিনি তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার বিষয়টিও স্বীকার করেন। হালে শতাব্দী রায়কেও দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে তিনি বিজেপিতে যোগদান করাতে চেয়েছিলেন। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের সামনে তিনি শতাব্দী রায়কে ফোন করেন।
২০২১-এর কিছুদিন আগে শুভেন্দু অধিকারি সদলবলে যোগ দিলেন বিজেপিতে। মুকুল রায়ের হাত রয়েছে বলে শুভেন্দুই জানিয়েছেন। শুভেন্দু বিজেপির পতাকা হাতে নিয়েই বলেন, মুকুল রায় আমাকে বলেছিলেন, শুভেন্দু সম্মান নেই ওখানে, এখানে সম্মান নিয়ে কাজ করবি চলে আয়। মুকুল রায় যে তলে তলে যোগাযোগ রেখেছিলেন, তা প্রতিধ্বনিত হয়েছে শুভেন্দুর কণ্ঠে।আর শীলভদ্র দত্ত থেকে সুনীল মণ্ডলরা যে মুকুল রায়ের অঙ্গুলিহেলনেই শুভেন্দুর সঙ্গে জোট বেঁধেছিলেন তাও স্পষ্ট। কেননা মুকুল রায়ের অনুগত বলে পরিচিত শীলভদ্র দত্ত অনেকদিন ধরেই তৃণমূল ছাড়বেন ছাড়বেন করছিলেন, তাঁকে শুভেন্দুর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া বা উত্তরবঙ্গের নেতাদেরও বিজেপিতে নিয়ে আসার পিছনে হাত মুকুলের!
No comments:
Post a comment