ব্যারাকপুর: ত্রাণ বন্টনকে ঘিরে গত ৫ তারিখ রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল কামারহাটি। অভিযোগ ওঠে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর রুপালি সরকার ও তার দলবলের ত্রাণ বিলিকে কেন্দ্র করে দলের অন্যপক্ষের এক যুবক দু’দিন আগে ব্যাপক মারধর করে। ওই দিন এলাকায় খবর রটে যায় যে ওই যুবক মারা গিয়েছেন। এরপরেই গোটা এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। রক্তাক্ত হন এক পুলিশকর্মী। ভাঙচুর করা হয় কাউন্সিলরের বাড়ি-সহ দলীয় দফতর। এরপরে ঘটনার তদন্তে নেমে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের বেলঘরিয়া থানার পুলিশ। পরে রবিবার কাউন্সিলর রুপালি সরকার আত্মসমর্পণ করেন ও অভয় তেওয়ারি-সহ দুর্গেশ সাউকে গ্রেফতার করে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ।
.
অভিযোগ, সৌমেন দাস ও তার সঙ্গীরা মিলে লকডাউনের শুরু থেকে এলাকায় ত্রাণ বিলির কাজ করছিল। সেই সময় কাউন্সিলর নিষ্ক্রিয় ছিলেন। এরপরে কাউন্সিলরও সক্রিয় হয়ে ওঠেন এবং ত্রাণ বিলি শুরু করেন। সেই ছবি তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেন। এ নিয়ে ৩ তারিখ সৌমেন দাস নামে ওই যুবক প্রতিবাদ জানান। এই নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বচসাও বাধে। সেই বচসা চলাকালীনই কাউন্সিলর ও তার ছয়-সাত জন সঙ্গী বাঁশ, লাঠি, রড দিয়ে ব্যাপক মারধর করেন ওই যুবককে। গুরুতর আহত হন ওই যুবক। এরপরেই ওই যুবককে প্রথমে কামারহাটির সাগর দত্ত হাসপাতাল, পরে সেখান থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরজি কর ও পরে কলকাতার পিজি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সোমবার রাতে ওই যুবকের মৃত্যু হয় পিজি হাসপাতালে। মঙ্গলবার কামারহাটির ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের কাছে সৌমেনের মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই এলাকায় চাপা উত্তেজনা ছড়ায়। তবে পুলিশ পিকেট থাকায় কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। যদিও গোটা এলাকা থমথমে ছিল। এদিন বিকেলে এলাকায় দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে মৌনী মিছিল করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
.
এ দিন সকাল থেকেই থমথমে ছিল গোটা এলাকা। পরোপকারী সৌমেনের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েন মা অনু দাস-সহ পাড়া-প্রতিবেশী সকলে। সৌমেনের মা এ দিন ভেজা গলায় অভিযুক্ত কাউন্সিলর ও অন্যান্যদের ফাঁসির দাবি জানান। বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন সৌমেনের দিদি। এদিকে, এদিনই বিজেপির তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় মৃত্যুর আগে সৌমেনের জবানবন্দি বলে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়। সেখানে সৌমেন অভিযুক্ত কাউন্সিলর রুপালি সরকার-সহ বেশ কয়েকজনের নাম করেন। যারা তার ওপর আক্রমণ চালায় বলে দাবি করেন তিনি। অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ফাঁসির দাবি জানিয়েছে।
No comments:
Post a comment